Submitted by mythrobin(প্রিয় টেক) লেখার শুরুতেই যারা উইন্ডোজ ছাড়া কিছু বুঝেন না (আসলে বুঝতে চান না) তাদের কে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এই পোস্ট শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা নতুন কিছু পরখ করতে চান, যারা মুক্ত সোর্সের জগতে প্রবেশ করতে চান।
কারা এই পোস্ট পড়বেন না: আপনার অহেতুক সময় নষ্ট করে আমার লাভ নেই। আমার না হয় খেয়ে দেয়ে কোন কাজ নেই কিন্তু আপনি মহা ব্যাস্ত নাগরিক। ব্যাস্ত জাতিকে আমি ব্যাস্ত থেকে দেশের উন্নয়ন করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও নিচের ৩ ধরনের জনগন এই পোস্ট পড়া থেকে বিরত থাকুন:
ওকে অল সেট। আসুন এবার শুরু করি। আপনি কেন উইন্ডোজ ছেড়ে লিনাক্স ব্যবহার করবেন সেটাই আমি আজ বলব। শুরুতেই বলে নেই "লিনাক্স" কোন অপারেটিং সিস্টেম নয়। এটি অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেল। এই কার্নেল ব্যবহার করে শত শত অপারেটিং সিস্টেম বানানো হয়ছে/হচ্ছে। আমরা সেগুলোকে বলতে পারি লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম।
লিনাক্সের জগতে আপনাকে স্বাগতম:
লিনাক্সের কথা হয়ত আপনি পূর্বে শুনেছেন, হয়ত আপনি এমন কাউকে চিনেন যে লিনাক্স ব্যবহার করে। শুনেছেন এমন মানুষের কথা যারা লিনাক্স ভালবাসে, হার্ডকোর লিনাক্স ফ্যানের কথা শুনেছেন, শুনেছেন বড় বড় ওয়েব ডেভেলপার অথবা প্রোগ্রামারদের কথা যারা লিনাক্স ব্যাবহার করে প্রফেশনের খাতিরেই।
লিনাক্সের কথা হয়ত আপনি পূর্বে শুনেছেন, হয়ত আপনি এমন কাউকে চিনেন যে লিনাক্স ব্যবহার করে। শুনেছেন এমন মানুষের কথা যারা লিনাক্স ভালবাসে, হার্ডকোর লিনাক্স ফ্যানের কথা শুনেছেন, শুনেছেন বড় বড় ওয়েব ডেভেলপার অথবা প্রোগ্রামারদের কথা যারা লিনাক্স ব্যাবহার করে প্রফেশনের খাতিরেই।
চেষ্টা চালিয়েছেন কি কখনও লিনাক্স ব্যবহারের? ধরে নিলাম কোন এক সময় আপনি সেটা করেছেন কিন্তু ঠিকমত কিছু বুঝে উঠতে পারেন নি। আপনি তখন পুনরায় উইন্ডোজে ফিরে গিয়েছেন। ব্যপারটা কেন এমন হল? আপনাকে উইন্ডোজে কেন ফিরে যাওয়া লাগল? আপনি সেটা চিন্তা করে দেখেছেন?
আমি শতভাগ নিশ্চিত আপনার হাতে যখন প্রথম কম্পিউটার আসে তখন আপনি উইন্ডোজ নির্ভর ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ পিসি চালানো শিখেন। এখানেই হয়েছে সমস্যাটা। একটা জিনিস আয়ত্ত করে ফেলার পর নতুন কিছু পরখ করতে গিয়ে হোচট খেয়েছেন। ধরুন যদি আপনাকে শুরুতেই লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম চালাতে দেয়া হত তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়াত? আপনি শুনলে অবাক হবেন এই বাংলাদেশেই এমন মানুষ আছে যারা জন্মের পর প্রথম কম্পিউটার ব্যবহার শুরু করে ডেবিয়ান, রেড হ্যাট চালিয়েছিল। নাম গুলো অপরিচিত লাগলে বলে দেই, এগুলো দুটি ভিন্ন লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের নাম।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে: আমি যেটা শিখেছি সেটাই ব্যবহার করি, কঠিন জিনিস কেন ব্যবহার করব। লিনাক্স তো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য নয়।
উত্তর: প্রথমত: লিনাক্স একসময় কঠিন ছিল বটে তবে এখন এটা অনেক বেশী ইউজার ফ্রেন্ডলি। দ্বিতীয়ত: লিনাক্স অবশ্যই সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য।
লিনাক্স কি? লিনাক্সের ইতিহাস কি? আগে কেমন ছিল? কোথায় পাওয়া যাবে? কিভাবে ইনস্টল করে? এগুলো নিয়ে ইন্টারনেটে লক্ষাধিক পোস্ট পাবেন। অনুগ্রহ করে গুগল করুন।
আমি এখন লিনাক্স ব্যবহারের সুবিধাগুলো তুলে ধরব যেটা নিয়ে আপনাদের অনেকেই বিভ্রান্ত থাকেন। আশা করছি লেখাটি পড়ার পর আপনি এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন।
"কম্পিউটার ভাইরাস" ভুলে যান: আপনার উইন্ডোজ মেশিন বেয়াদবের মত হঠাৎ করেই রিস্টার্ট নিচ্ছে? মুমূর্ষু রোগীর মত ধুঁকতে ধুঁকতে চলছে? উল্টাপাল্টা প্রোগ্রাম চালু হয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যার মূলে কম্পিউটার ভাইরাস। এন্টিভাইরাসেও কাজ হচ্ছে না? এন্টিভাইরাস বদলে নিচ্ছেন অথবা আপডেট করছেন? পুনরায় একই সমস্যা দেখা দিচ্ছে?
আপনি অন্ধকার যুগ থেকে বের হয়ে আসুন। প্রবেশ করুন লিনাক্সের জগতে। ভাইরাস বলতে যেখানে কিছুই নেই।
স্ট্যাবিলিটি: কম্পিউটারে কাজ করতে করতে হঠাত যখন উইন্ডোজ ক্র্যাশ করে তখন আপনার সকল ডাটা হারিয়ে যায়। অপারেটিং সিস্টেমের সাথে হার্ডওয়্যারের গন্ডগোলের জন্য পিসি হ্যাং হয়ে যায়? কুখ্যাত নীল স্ক্রীন দেখতে পান? পিসি স্ট্যাবল করতে রিস্টার্ট দিতে হয়?
এসব কিছুই আপনাকে লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে করতে হবে না। বরং আপনি রিস্টার্ট ছাড়া বছরের পর বছর কম্পিউটার চালু অবস্থায় রেখে দিতে পারবেন।
কোন ড্রাইভার প্রয়োজন নেই: উইন্ডোজে বেশীরভাগ সময় কোন পেরিফেরাল ডিভাইস সংযোগ করলে আলাদা করে ড্রাইভার ইনস্টল হয়, অথবা ম্যানুয়ালি সোর্স থেকে ড্রাইভার ইনস্টল করে নিতে হয়। মাঝে মাঝে আপনি ড্রাইভার খুঁজে না পেয়ে দিশা হারিয়ে ফেলেন। তখন বন্ধুর বাসা অথবা সাইবার ক্যাফেতে দৌড়ান।
লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে আলাদা করে কোন ড্রাইভার ইনস্টল করতে হয় না। লিনাক্স কার্নেলে পূর্বনির্ধারিত ভাবে সকল ড্রাইভার অন্তর্ভূক্ত থাকে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন? প্লাগ এন্ড প্লে!
একটি মাত্র ক্লিকে আপডেট: মাইক্রোসফট উইন্ডোজের একটি টুল আছে নাম তার উইন্ডোজ আপডেট। ক্লিক করলে উইন্ডোজ আপডেট হয়। কিন্তু যেসকল সফটওয়্যার মাইক্রোসফটের নয় সেগুলোর কি হবে? একটি একটি করে আপডেট করা ছাড়া উপায় নেই।
কিন্তু লিনাক্সে আপনি একটি মাত্র ক্লিকে সিস্টেম সফটওয়্যার থেকে শুরু করে থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার সব আপডেট করে নিতে পারবেন।
উইন্ডোজ চলে লিনাক্স দৌড়ায়: ডিজাইন ও আর্কিটেকচার জনিত কারণে উইন্ডোজের দিন দিন ধীর গতির হয়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। আপনি বলুনত তো, আপনার বন্ধুটির মুখে এ যাবৎ কালে কত হাজার বার আপনি শুনেছেন "দোস্ত পিসিটা স্লো হয়ে গেসে, রি-ইনস্টল দিয়ে আসলাম", "তোর কাছে উইন্ডোজের ডিভিডি আছে? আজকে বিকালে দিস, উইন্ডোজ সেটআাপ দিব, স্লো হয়ে গেসে","এই শোন আমার পিসিটা স্লো হয়ে গিয়েছে, কাল একটু সময় করে এসে সেটআপ দিয়ে যেতে পারবি?" ইত্যাদি ইত্যাদি।
কেন? গর্তের ফুঁটো (জানালা) দিয়ে তাকিয়ে না থেকে বরং বের হয়ে মুক্ত আকাশে উড়ুন। লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম মাত্র একবার ইনস্টল দিন, চালাতে থাকুন বছরের পর বছর।
নিরাপত্তা: আপনি কি জানেন উইন্ডোজ আপনার পিসিতে সবসময় ভাইরাস, ট্রোজান, স্পাইওয়্যার, ম্যালওয়্যার, অ্যাডওয়্যার প্রবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে? আপনি উইন্ডোজ ইনস্টল করার পর এসকল জঞ্জালে আক্রান্ত হতে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট (ইন্টারনেটে সংযুক্ত অবস্থায় গড় হিসাব)। এখন উপায় কি? আপনি কি করেন? ১। একটা ফায়ারওয়াল বসান ২। একটা এন্টিভাইরাস ইনস্টল করেন ৩। একটি এন্টি অ্যাডওয়্যার প্রোগ্রাম ইনস্টল করেন ৪। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার না করে ফায়ারফক্সের মত ব্রাউজার ব্যবহার শুরু করেন ৫। আশা করেন যারা আপনার পিসিতে দূরে বসে অ্যাটাক করতে চায় তারা আপনার থেকে কম স্মার্ট! একটা নিরাপত্তা ত্রুটি আবিষ্কার হওয়ার পর মাইক্রোসফট সেটার জন্য সিকিউরিটি আপডেট বের করতে করতে মাস চলে যায়, অনেক সময় তো তাদের নাক ডাকার আওয়াজ পাবেন। ওহ মাই গড! এত্ত কিছু কেন?
লিনাক্সে এসব কিছুই নেই, পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স কার্নেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীর ৯০ ভাগের বেশী সার্ভার চলে লিনাক্সে। মূল কারণ একটাই, নিরাপত্তা। এবং এটি ওপেন সোর্স। পৃথিবীর যে কেউ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের কোড ফাইল খুলে কোড পরিবর্তন করতে পারবে, উন্নত করতে পারবে যে কোন মূহুর্তে। উইন্ডোজের ক্ষেত্রে কি হয়? মাইক্রোসফটের ডেভেলপার স্টাফরা ছাড়া কেউ কোড পরিবর্তন করতে পারবে না।
বাগ: উইন্ডোজে আপনি বাগ ধরতে পারলে কি করেন? শুধু একটা কাজই করা আছে, বসে বসে দোয়া করা যেন মাইক্রোসফট অতি সত্তর বাগটি ফিক্স করে আপডেট দেয়। বাগটি যদি আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা দূর্বল করে দেয় তখন কি করবেন? তখন আপনার আরেকটি কাজ করার আছে। পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ দোয়া করতে থাকুন। যদি আপডেটে বাগ ফিক্স না হয় তাহলে অপেক্ষা করুন পরবর্তী সংস্করণ বের হওয়ার জন্য। তখন হলেও হতে পারে। কিন্তু আপনাকে পুনরায় অরিজিনাল উইন্ডোজ পেতে গুনতে হবে ডলার। কি নিদারূণ!
সকল লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে বাগ ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকে। শুধু অপারেটিং সিস্টেম নয়, ওপেন সোর্সের প্রায় সকল অ্যাপ্লিকেশনে থাকে এই সিস্টেম। আপনি বাগ রিপোর্ট করতে পারবেন, বাগ নিজে নিজে ফিক্স করতে পারবেন, ফিক্স করার পর সকলের ব্যবহারের জন্য শেয়ার করতে পারবেন, অ্যাপ্লিকেশনের পরবর্তী আপডেটে আপনার করা ফিক্সটি অন্তর্ভূক্ত করা হবে, যা ব্যবহার করবে লক্ষাধিক ব্যবহারকারী। এটাই ওপেন সোর্স কমিউনিটির শক্তি। ব্যবহারকারীরাই ডেভেলপ করে, বাগ ফিক্স করে আবার ব্যবহারকারীরাই সেটা ব্যবহার করে। আপনিও সামিল হোন এই কমিউনিটিতে।
লিনাক্সের সুবিধার কথা বলতে থাকলে এই লেখা আমি শেষ করতে পারব না। তাই এক কাজ করি, প্রাত্যহিক ব্যবহৃত কিছু ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের নাম বলে আজকের মত শেষ করি। অনেকের মনে দ্বিধা থাকতে পারে যে, আমরা যে সকল কাজ উইন্ডোজে করে অভ্যস্থ এবং যে সকল সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেছি এতদিন, সে সকল কাজ অথবা সেরকম সফ্টওয়্যার লিনাক্সে চালানো যাবে কিনা? উত্তরে বলতে হয় মোটামুটি সকল গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত সফটওয়্যার লিনাক্সে রয়েছে তবে কিছুটা পরিবর্তিত রুপে:
Windows Apps | Linux Apps |
MS Office | OpenOffice , LibreOffice |
Adobe Photoshop | Gimp |
Adobe Illustrator | Inkscape |
Adobe Lightroom | Darktable |
Adobe Pagemaker | Scribus |
3D Studio Max | Blender |
Dreamweaver | Compozer , Bluefish |
Guitar Pro | TuxGuitar , Kguitar |
Instant Messenger | Pidgin |
Windows Movie Maker | OpenShot , PiTiVi |
mIRC | Xchat , ChatZilla , Pidgin |
Media Player | VLC |
একটি কপি পেস্ট পোস্টঃ http://tech.priyo.com/blog/2013/07/28/mWyL.html
0 comments :
Post a Comment